এলকপ মাসিক বুলেটিন ( ১ম বর্ষ ২য় সংখ্যা)
সম্পাদকীয়
ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন ও সার্বভৌর্বভৌম রাষ্ট্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। এই যুদ্ধে ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। সে জন্য মানবাধিকার প্রতিষ্ঠারঅঙ্গীকার বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ন্যায্যতার ভিত্তি । এই অঙ্গীকার থেকে বিচ্যূত হবার কোন সুযোগ নেই। মানবাধিকার কর্মীদেরকে সেদিকে সদা সতর্ক দৃষ্টিদৃ রাখতে হবে ।পাশাপাশি এও খেয়া ল রাখতে হবে কেউ যেন মানবা ধিকারকে নিজের সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থচরিতার্থ করতে ব্যবহার না করে । এবারের সংখ্যা অনেকটাই গত সংখ্যার মতো করে সাজানো হয়েছে। তবে বুক রিভিয়্যু এ সংখ্যার নতুন সংযোজন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’কে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই তিনটি নীতি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এই নীতিগুলো মানবাধিকারেরও ভিত্তি। গত সংখ্যায় অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের ‘সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দ্রোহী আইনজীবী’ শীর্ষক নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এ সংখ্যায় তাঁর মানবিক মর্যাদা: মানবাধিকারের ভিত্তি’ শীর্ষক নিবন্ধটি ছাপা হলো ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বের একটি জাতি হিসাবে এবং জাতিসংঘের সনদ মোতাবেক আমাদের উপর যে দায়িত্ব ও কর্তব্য বর্তেছে তা যথাযথভাবে আমরা পালন করব’। এদিকটি বিবেচনা করে ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে এনফোর্সমেন্ট মেকানিজম’ শিরোনামের লেখাটি যুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের যে আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা রয়েছে তা যেন যথাযথভাবে পালিত হয় সে সম্পর্কে এই লেখাটি সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে। মানবাধিকার ও অন্যান্য বিষয়ে রাষ্ট্রের সমালোচনা করাটা যেমন দরকার, ঠিক তেমনই রাষ্ট্রের ইতিবাচক কর্মকান্ডগুলোকে তুলে ধরাটাও প্রয়োজন। সেজন্য ইনফোগ্রাফিক্সে জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রাষ্ট্রের ভূমিকা সম্পর্কে তুলে ধরা হল।
ঔপনিবেশিক আমলের আইনিব্যবস্থা বাংলাদেশের সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক অধিকার এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে প্রদত্ত অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এর একটি দিক হল কারাগারে পুলিশি নির্যাতন ও মৃত্যু। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘কারাগারের রোজনামচা’য় উঠে এসেছে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া মানবাধিকার বিবর্জিত এবং পাকিস্তান আমলে আরও নিপীড়নমূলক হয়ে ওঠা কারাব্যবস্থার সমালোচনা। এ সংখ্যায় এই মূল্যবান বইটির রিভিয়্যু প্রকাশিত হলো। এছাড়া ১০ই ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে এলকপ কর্তৃক আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন ছাপা হলো। সবশেষে আইনশিক্ষা ও গবেষণায় এলকপের বিশেষ সংযোজন সিএলআরের সর্বশেষ গবেষণা নিয়ে একটি প্রতিবেদন সন্নিবেশিত হয়েছে।
[dflip id=”15370″ type=”thumb”][/dflip]
Leave a Reply